Story

মুম্বইয়ের বস্তিতে চা-শিঙাড়া খেয়ে দিন কাটত! পরিশ্রম করে আজ সেই বস্তির ছেলে জয়কুমার আমেরিকার রোবট গবেষক

আমরা আমাদের চারপাশে এমন অনেক ঘটনাই ঘুরতে দেখি যা রীতিমত অবাক করে তোলে আমাদের। ইচ্ছাশক্তির জোর আর পরিশ্রমই মনোভাব থাকলেই যে কোন মানুষ পৌঁছে যেতে পারে সাফল্যের চূড়ায়। জয়কুমার বৈদ্য তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে আছে আমেরিকার রিসার্চার।

সমাজের একদম নিম্নস্তর থেকে উঠে এসেছেন জয়কুমার বৈদ্য। ছোট থেকেই তিনি তার মাকে নিয়ে মুম্বাইয়ের কুরলা বস্তিতে থাকতেন। কোন কোন দিন খাবার পেতেন আবার কোন কোন দিন খাবার জোটাতেই পারতেন না।

আবার কোন কোন দিন সিঙ্গারা আর বড়াপাও খেয়ে দিন কাটিয়ে দিতেন। তবে তার পড়াশোনায় যাতে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য তার মা যে কাজই পেতেন সেই কাজটাই করতেন। ছোটবেলায় স্কুলে পড়াকালীন একবার স্কুলের মাইনে দিতে না পারায় তার রেজাল্ট আটকে গিয়েছিল এবং তাকে বলা হয়েছিল সে যেন গাড়ি চালানো শেখে।

এরপর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তার স্কুলের মাইনে মিটিয়ে দেয় এবং উচ্চশিক্ষার জন্য তাকে লোন দেয়। সে একটু বেশি রোজগারের জন্য একটি টিভি সারাইয়ের দোকানে চার হাজার টাকার বিনিময় কাজ করতো এবং স্থানীয় পড়ুয়াদের পড়াতো।

স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জয়কুমার সোমাইয়া কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তার কঠোর পরিশ্রমের জোরেই আজ সে আমেরিকা। এন্ড টার্বো কোম্পানি থেকে কলেজে পড়াকালীনই কাজের জন্য ডাক পান।

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে জয়কুমার ৩০,০০০ টাকা বেতনের চাকরি পান টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে। এরপর এই কোম্পানিতে তিনি তিন বছর কাজ করেছেন।

এরপর তিনি পিএইচডি করা শুরু করেন। পিএইচডি করতে করতেই তার দুটো রিসার্চ পেপার একটি আন্তর্জাতিক মানের জানালে প্রকাশ পায় জাতার ভাগ্যের তালা খুলে দেয়। তার ওই রিসার্চ পেপার দুটোই নজরে আসে ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ারের।

এরপরই তিনি ডাক পান সেখান থেকে। ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ায় রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে জয়কুমার যোগদান করেন। ওখানে যোগদান করার পর জয়কুমারের মাসিক স্টাইপেন্ড ২,০০০ ডলার হয়।

যা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। ছোট থেকে তার মা তার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন তাই খুব তাড়াতাড়ি জয়কুমার তার মাকেও নিয়ে যাবেন আমেরিকায়।

তার এই জীবনযুদ্ধে সাফল্যের গল্প মন থেকে নাড়িয়ে দেয় অনেককে। উদ্বুদ্ধ করে জীবনে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার। জয়কুমার প্রমাণ করে দিয়েছে যদি মনে ইচ্ছা শক্তি থাকে আর পরিশ্রম করার জোর থাকে তাহলে সে সফল হবেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button